নিজস্ব প্রতিনিধি(সতীশ কুমার): কবি মধুমিতা শুক্লা হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী অমরমণি ত্রিপাঠী এবং তাঁর স্ত্রী মধুমণি ত্রিপাঠীকে মুক্তি দিল উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত ওই দম্পতি ২০ বছর পর জেল থেকে মুক্তি পেলেন। সুপ্রিম কোর্টও উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং তাঁর স্ত্রীর মুক্তিতে স্থগিতাদেশ দিল না।
মধুমিতা শুক্লা পরিচিত ছিলেন হাস্যকবি হিসাবে। উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরির বাসিন্দা মধুমিতা রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে রসিকতা করে এবং আক্রমণ করে বেশ জনপ্রিয় হয়ে যান। গুঞ্জন শোনা যায়, সেসময় অমরমণির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান মধুমিতা। যদিও অমরমণি বিবাহিত ছিলেন। ২০০৩ সালের ৯ মে মধুমিতাকে গুলি করে খুন করা হয়। পরে তদন্তে উঠে আসে, মৃত্যুর সময় সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন ওই তরুণী কবি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, যে ভ্রূণ মধুমিতার গর্ভ থেকে পাওয়া গিয়েছে, অমরমণি ত্রিপাঠীর ডিএনএ-র সঙ্গে সেটির মিল রয়েছে। যদিও উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী দাবি করেছিলেন, মধুমিতা শুক্লার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না। ডিএনএ-র রিপোর্টও ভুল। তবে শেষরক্ষা হয়নি।
২০০৩ সালের সেই মধুমিতা শুক্ল হত্যাকাণ্ড গোটা দেশে আলোড়ন ফেলে দেয়। সেই মামলার মূল অভিযুক্ত ছিলেন সমাজবাদী পার্টির নেতা তথা তৎকালীন মন্ত্রী অমরমণি ত্রিপাঠী এবং তাঁর স্ত্রী। ২০০৩ সালেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০০৭ সালে তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে দেরাদূনের বিশেষ আদালত। তখন থেকেই কারাবাসে রয়েছেন তারা। যদিও ২০১৩ সাল থেকে গত ১০ বছর শারীরিক অসুস্থতার জন্য প্রাক্তন ওই মন্ত্রী এবং তাঁর স্ত্রী হাসপাতালেই ছিল।
অমরমণি ত্রিপাঠী এবং তাঁর স্ত্রী-কে ভাল আচরণের জন্য মুক্তি দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। যদিও মধুমিতা শুক্লার বোন নিধি এই মুক্তিতে প্রবল আপত্তি জানিয়েছেন। ত্রিপাঠী দম্পতির মুক্তির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন তিনি। শুক্রবার সেই মামলার শুনানি ছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টও প্রাক্তন মন্ত্রী এবং তাঁর স্ত্রীর মুক্তিতে কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। ফলে ত্রিপাঠী দম্পতির মুক্তিতে আর কোনও বাধা রইল না।