নিজেস প্রতিনিধি সুজাতা দে:জাপানি বিজ্ঞানীদের এক যুগান্তকারী আবিষ্কার: এবার আর প্লাস্টিক দূষণ নয়!
RIKEN Center for Emergent Matter Science এবং University of Tokyo-র গবেষকরা এক ধরনের বায়োডিগ্রেডেবল বা জৈববিয়োজ্য প্লাস্টিক আবিষ্কার করেছেন, যা সমুদ্রে গলে যায় এবং মাটিকে পুষ্ট করে!
ড. Takashi Nishikawa এবং তার দল এই গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন। এটা একদিকে প্লাস্টিক দূষণ রোধে সাহায্য করবে এবং অন্যদিকে কৃষির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এই প্লাস্টিকটি সোডিয়াম হেক্সামেটাফসফেট (একটি খাদ্য-নিরাপদ উপাদান) এবং গুয়ানিডিনিয়াম-ভিত্তিক মনোমারের এক নতুন সংমিশ্রণে তৈরি। এই উপাদানগুলো সল্ট ব্রিজ তৈরি করে প্লাস্টিকের কাঠামোকে ধরে রাখে, যতক্ষণ না এটি সমুদ্রের জলের সংস্পর্শে আসে।
একবার সমুদ্রে নিমজ্জিত হলে, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এটি দ্রবীভূত হতে শুরু করে এবং কোনো মাইক্রোপ্লাস্টিকের অবশিষ্টাংশ ফেলে যায় না।
মাটিতে, এটি প্রায় দশ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে যায় এবং ফসফরাস ও নাইট্রোজেনের মতো পুষ্টি উপাদান নির্গত করে, যা গাছের বৃদ্ধি ও মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
এই উপাদানটি অ-বিষাক্ত, অ-দাহ্য এবং কার্বন-নিরপেক্ষ পচন প্রক্রিয়ার কারণে বিশেষভাবে সম্ভাবনাময়। প্রচলিত প্লাস্টিকের মতো এটি পরিবেশের ক্ষতি না করে বরং ইতিবাচক অবদান রাখে।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, প্রায় ৯১% অ্যাডিটিভ যৌগ এবং ৮২% মনোমার পুনরুদ্ধার ও পুনরায় ব্যবহার করা যেতে পারে, যা একটি সার্কুলার অর্থনীতির ধারণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এই প্লাস্টিকের বহুমুখিতা বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ব্যবহারের দ্বার উন্মোচন করে। কৃষিক্ষেত্রে, এটি বায়োডিগ্রেডেবল মাল্চ ফিল্ম এবং বীজ আবরণী হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
সামুদ্রিক পরিবেশে, এটি মাছ ধরার জাল এবং দড়ির একটি টেকসই বিকল্প হতে পারে, নরমাল প্লাস্টিকে যেখানে “ঘোস্ট গিয়ার” দূষণ হয়।
এছাড়াও, খাবারের কনটেইনার, নিষ্পত্তিযোগ্য কাটলারি এবং পরিবেশ-বান্ধব প্যাকেজিংয়ের মতো ভোক্তা পণ্যগুলিতেও এর উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।
জাপানি বিজ্ঞানীদের এই উদ্ভাবন বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক বর্জ্য উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে এবং বায়োডিগ্রেডেবল, পুনর্ব্যবহারযোগ্য, এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ উপকরণের একটি নতুন যুগের সূচনা করতে পারে।
এটি আমাদের এমন ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে—যেখানে প্লাস্টিক হবে পরিবেশবান্ধব ও পুষ্টিকর।
সত্যিই এই বিজ্ঞানীদের যতই প্রশংসা করা যায় ততই কম।