নিজেস প্রতিবেদন সুজাতা দে:জাপান সম্প্রতি বিজ্ঞান ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে এক অভাবনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। দেশটি বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম গর্ভ (Artificial Womb) তৈরি করেছে, যেখানে একটি ভ্রূণ মায়ের শরীরের বাইরে বেড়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। এই যুগান্তকারী আবিষ্কার শুধু প্রজনন চিকিৎসার ক্ষেত্রেই নয়, বরং মানবজীবনের ভবিষ্যৎ ভাবনাতেও এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
কৃত্রিম গর্ভ একটি বিশেষ ধরনের জৈব তরলে পূর্ণ স্বচ্ছ থলে, যেখানে ভ্রূণকে প্রাকৃতিক গর্ভের মতোই সবরকম পুষ্টি, অক্সিজেন ও উষ্ণতা সরবরাহ করা যায়। এতে ভ্রূণ স্বাভাবিক হারে বেড়ে ওঠে, এমনকি হৃদস্পন্দন, ফুসফুসের কার্যক্রম ও মস্তিষ্কের বিকাশও হয় একদম স্বাভাবিক উপায়ে। গবেষকরা বলছেন, এটি মূলত অকাল প্রসব (premature birth) ও বন্ধ্যত্ব সমস্যায় ভোগা দম্পতিদের জন্য এক আশার আলো।
এই কৃত্রিম গর্ভ প্রযুক্তির মাধ্যমে চিকিৎসকেরা আগেই জন্মানো ঝুঁকিপূর্ণ শিশুকে মাতৃগর্ভের পরিবর্তে কৃত্রিম গর্ভে স্থানান্তর করে সুরক্ষিতভাবে পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটাতে পারবেন। বিশেষ করে যেসব শিশু ২৪ সপ্তাহ বা তারও আগে জন্ম নেয়, তাদের টিকে থাকার সম্ভাবনা এখনো অনেক কম। এই নতুন পদ্ধতি সেই সীমাবদ্ধতা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পারে।
তবে এই প্রযুক্তিকে ঘিরে কিছু নৈতিক ও সামাজিক প্রশ্নও উঠেছে। যেমন—মায়ের ভূমিকা কি তাহলে শুধুই জৈবিক হবে? ভবিষ্যতে কি শিশু জন্ম সম্পূর্ণরূপে প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়বে? এসব প্রশ্ন নিয়ে নানা মহলে বিতর্ক চলছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা আশ্বস্ত করছেন যে, এর উদ্দেশ্য মায়ের ভূমিকা হ্রাস করা নয়, বরং জটিল প্রজনন সমস্যাগুলোর সমাধান দেওয়া।
সব মিলিয়ে, জাপানের এই গবেষণা মানবজাতির জন্য এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ, যা ভবিষ্যতে নিঃসন্তান দম্পতি ও নবজাতকদের জীবন বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।