________________________________________
শুধু প্রিয়ংবদার জন্য
________________________________________
সঙ্গোপনে অফুরান চেয়ে থাকা ; অনেকটা অভিমান সমস্ত নিঃশ্বাস ! তবু তুমি থাকতে প্রিয়ংবদা কেন হাওয়া নির্জন ?
এই তো সে-ই কবিতা থেকে উদাস হেঁটে আসা দ্বিতীয় জগত ; স্বপ্ন থেকে নীরবতার ক্ষমাহীন অসহীষ্ণু সময় ,— এভাবেই ছুঁই দেহভর্তি তোর তপস্যায় প্রিয়ংবদা !
কিছু কিছু মিথ্যা ভীষণ ছান্দিক ; তবু কেন এই ধুলো রাস্তায় নানাবিধ সর্তগুলো পোডায় আমাকে ,—– এভাবেই চাঁদ ওঠে বেমালুম পাতাপতঙ্গেরা ঘুনিয়ে যেতে যেতে ! সে-ই লম্বা একটা ছায়া ; সেখানে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টির সুচারু বর্ষণ , এটাও তোমার অভিমানের কথা চিন্তা করে এনেছি কবিতায় প্রিয় নারী !
স্বাভাবিক এখান থেকে খোলা জানলার এপাড় – ওপাড় ; সেখানে তুমি এক গদ্যময় স্মৃতি , মনের ভিতর অন্য এক মনের অন্তর্গত কথা বলা বলি ; এটাও কিন্তু অবুঝ পাগলামি ! এটাও তোমার জন্য মনেতে অসুখ নিয়ে একলা যাপন !
সত্যি দয়াপ্রার্থীর রূপ নিয়ে অনেকটা নিচু গলায় কতবার বলেছি ; প্রিয়ংবদা তুমি আমার !
স্নান ঘরে আমি জ্যোৎস্নার মত নিঃসঙ্গ ; চোখের ভেতর নানা কারণের দুঃস্বপ্ন আঁছড়ে পড়ে , তবু মধ্যরাতে বারান্দায় একলা এসে দাঁড়াই ব-হু ক্ষণ !
আমার কোনভাবে নিষ্কৃতি নেই ; তবুও উচ্চারণ করি সহজ নির্লজ্জে ,— আমি একমাত্রই তোমায় ভা-লো-বা- সি !
এই সময় পোড়ায় এভাবেই ; চোখের সমস্ত অশ্রুপাত ভিজিয়েছে কথাহীন পথ , তবু এই পথে এধার ওধারের ধাক্কা লাগে ! ভীষণ উষ্ণতায় বিছানায় এভাবে একা একা নির্ঘুমে রাত কাটে ,—– ওদিকের আকাশটায় এভাবেই জ্বলে ওঠে জ্যোৎস্নালোকের অন্য এক নক্ষত্র ; সেও আমারই মত প্রেমহীন !
শেষ একবার প্রতিদিনের অস্থিরতা জমে জমে বুকের মধ্যে জ্বলে শ্মশান ! ব্যক্তিগত মৃত্যু নিয়ে প্রতিদিন এভাবেই অনেকটা বেলা করে ঘুম ছেড়ে উঠে দাঁড়াই ; একমাত্র ভালোবাসার কাছে !
স্বভাবতই কবিতার প্রতিটা স্তবক ; অন্য এক অন্ধকারে নির্বাসন নিয়েছে ,—– সেখানে একক নীরবতায় প্রাচীন ক্যালেন্ডার খুলে দেখি ; তোমার সাথে কবে কোথায় দেখা হয়েছে , সেই স্মৃতিছবি !
সততই এভাবে ফিরিয়ে দিয়েছি প্রতিজন্মের মৃত্যু ; চেনা সময় , চেনা পথ , চেনা ফুলের গন্ধ , সব স-ব-ই ভাসিয়েছি চোখের জলে ! অথচ প্রিয়ংবদা এই বুকের একেবারে গভীরে তোমার তুমিকে সরিয়ে দিতে সাহস হয়নি ; যদি কোন দিন ফিরে এসে বল , কই কবি তোমার বুকের মধ্যে আমি কোথায় ??
________________________________________
মেঘ পালক ও বৃষ্টি ধ্বনি
_________________________________________
চোখ বিছিয়ে অন্তর্হিত ; হাত এগিয়ে যেইনা ধরতে যাব , স্বপ্ন যেন সাদা পৃষ্ঠায় এ’ভাবেই কুপোকাত্ ! তবুও যেন এই ঘুমন্তে শ্রবণ দেখা ; নেহাতি হাজার কথার বর্ণিত আঁকিবুকি ,—-
আকাশটা ঠিক আগের মতোই এক শারীরীক রঙ বদলে ঐতিহাসিক ! মনের ভেতর মন রাঙিয়ে আনন্দে ডুবু-ডুবু ,—-
আকাশটা সে-ই পদ্য পাড়ায় ইচ্ছে করেই বুক পেতেছে সোহাগ দিতে আমার কাছে ! ও-ই আকাশের সুদূর থেকে বৃষ্টি ঝরে একই ধারায় ; হঠাৎ যেন কি হচ্ছিল সেই ধ্বনিতে মন ডুবিয়ে এই আমিটার অতলান্তে !
মেঘ পালকে ভাসছি আমি ; অতীত এবং ভবিষ্যতে ! অন্য কোন ইচ্ছা গুলো ভরদুপুরে তোর এঁকেছে জ্যোৎস্না শরীর , এই জন্যেই ভেতরশুদ্ধ ঋণী রইলাম প্রিয়ংবদা ; সবটুকুই পাগল আবেগে !
কতবারযে তোকে পেয়েছি মেঘ সরিয়ে ; গভীর থেকে স্বভাবতই এভাবে ঠিক মন পুড়েছে ,—– অসুখটা যে পরমুখোপেক্ষী ; এটাওতো আগে বুঝিনি !
বৃষ্টি বৃষ্টি চোখ খানি তোর ; বেশি বললে বিশ্বব্যাপী ! ওই চোখেতে সারা বছরই আমার কাছে আষাঢ় – শ্রাবণ ,—- যদিও ঠিক এই সময়ে বাতাস হতে ইচ্ছা করে ; একমাত্র তোর জন্যে প্রিয়ংবদা !
এইতো আমার ভিতরশুদ্ধ তুই ছাড়া কেউ নেই ,—– আমার যত দোষগুলোকে আকাশ তারায় গুণন্তি করে মিলিয়ে নিলাম ; হেয়ালী নয় , সত্যি বলছি প্রিয়ংবদা ! এবার আমায় ক্ষমা করে দে ; তোর শরীরে ভাসার জন্য পুণ্যবান হতে দে !
গোটা রাতটা আমার মতোই অর্ধেক অবিশ্বস্ত ; তবু আমায় ক্ষমা করিশ ঘুম হারানো নির্ঘুমেতে এমনি ভাবে ,—– মেঘ যেন সেই তেপান্তরে উড়তে উড়তে অনেকটা দূ-র প্রেম প্রবাহে ; অস্পষ্ট কুমারী ! এই ঘরেরই এই বিছানায় অহরাত্রি তোরই স্মৃতি ; কি করে যে ভুলতে পরি প্রিয়ংবদা ? বন্ধ চোখের ভেতর থেকে ক্রমাগত একই ধ্বনি ; সঙ্গী কিম্বা সহপাঠী ,—-
যদিও আমার এই চিঠিতে আসা যাওয়ার চেনা পথটা বৃষ্টির শব্দে শব্দে কি ভাবে যে দুঃস্বপ্নের ভেতর মুছে গেল ! একমাত্র তুই সাক্ষী থাকলি ওরে পাগলী !!
________________________________________
স্মৃতিঘর ও পরিচিত উপহাস
________________________________________
যদি ওভাবে উচ্চারণ হত অফুরান স্বপ্নগুলো ; তাহলে আর একবার মৃত্যু নিয়ে ঘুমিয়ে পরবো এই ঘরে , এই বিছানায় !
মহাবনস্পতি থেকে শূন্যের অদূরের আকাশ ; এধারে – ওধারে মাখামাখি নীলের বৃষ্টি ….. ভেতরে নিরাময় স্তব ; চোখের পিঞ্জরে নির্জন নিঃশব্দ কথা , আরও কত প্রাঞ্চল অসুখ ; এ আমারই !
নতুন কেনা চশমায় চোখ বাসা বাঁধে ; হাওয়ায় বাতাসে ভাসে এ বাড়ির প্রতিটা স্তবক ৷ চার ধারের চোখগুলো ছায়া ছায়া ভাসমান ; অদ্ভুত হেঁয়ালী নিয়ে নির্বাক এভাবেই স্বপ্নে ঘুরে গেছে ব-হু বার ,—- অথচ প্রত্যন্ত অস্থিরতায় কেউ যেন শরীরের সমস্ত নগ্নতা আদিখ্যেতায় দেখাতে চেয়েছে এই আমিটাকে ! এই বাড়ি , ঘর – দোর , চেনা সিঁড়ির প্রতিটা অবয়ব কবে থেকে অন্য এক সময় থেকে নির্বাসন নিয়েছে ! অথচ এখন …..
সেই দেরাজে লুকিয়ে রাখা মৃত প্রজাপতির ডানা ; সেটাও মনকে পোড়ায় !
এই গভীরের অসুখ স্মৃতিভিক্ষা করে সময়ের কাছে কতবার , কতভাবে ,—- তবু যতবার আমার শরীর ছেড়ে চলে যাওয়া ; আজীবনের কবিতাদের ফেলে , সেগুলো এখন বাহিরের দরজায় দাঁড়িয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছে !
কাউকে এভাবে মন খুলে ডাকিনি এভাবে ; সেই আকাশ পাড়ের চাঁদ , সেও বৃষ্টির ভেতর আমার ডাক শুনতে পায়নি একবারও !
স্নানঘরের ভেতর বারোমাসের স্বপ্নদোষ ; তারাও মধ্যরাতের দুঃস্বপ্নে এসে আমি কেমন আছি খোঁজ নিয়ে গেছে !
কাল সারারাত এই মেঘ-বৃষ্টির ভেতর ঘরের জানলা খোলাই ছিল !
মনের মধ্যে দিয়ে কত রাতের নির্ঘুম যাপন ; সেও পাখির বাসার মত নীরবতায় একাকার ,—— সবটাই এই স্মৃতিঘরে একাই জীবন পেতে বসে আছে !
কেউ একজন মৃত্যুর পরেও নিমন্ত্রণ পাঠিয়েছে আমাকে ; উষ্ণ আলতো উচ্চারণে ,—– ভেতরের যাবতীয় প্রাপ্য দুঃখ ; তারাও আমার পায়ের নীচের রাস্তায় নির্দ্বিধায় অশ্রু ঝরিয়েছে !
এই রাস্তায় আমার নাম ধরে কবেকার আধপোড়া স্মৃতি ডেকেছে ; সেটাও নির্ঘুম ঘুমন্তে শুনতে পেয়েছি ,—– এই অন্তহীন সময় শ্মশান থেকে আমিও অশরর বৃষ্টি ভিজে ফিরে আসা ;
অন্য কোন জন্মঘরে ! মৃত্যুর অনেক পরে …..
________________________________________
অস্বীকার তো করিনি তোকে
________________________________________
একটা ছায়ার উপর দাঁড়িয়ে মনে হল যেন আমিও কৃপাপদহীন ; অশরীরী ! কবেকার মনটুকু জটিল সময়ের ভেতর দিয়ে থেকে থেকে ভুলে গেছে নিজেকে নিজেই ,—– এই মন দেহশূন্য নামগোত্রহীন অপ্রমেয় বিদেহী !
তুই অস্বীকার করলেও , না করলেও আমি প্রাচীন ভাষ্কর্যের মত এভাবেই একা ও একক রোদ বৃষ্টিতে নিঃসঙ্গ ! মন খারাপের গন্ধে নির্ঘুমে একাই থেকেছি স্মৃতিবাস সম্মেলিত ; এই নৈমিত্তিক কারণে তোকে ছুঁয়ে দেখার সামর্থ্য হয় নি একবারও ….. তবুও এই প্রেমগুলোতে তুই-ই যেন কুয়াশা মেখে অস্পষ্ট ভাসমান এখন !
কবিতার পাতায় পাতায় বুদ্ধিদীপ্তা সুন্দরি তুই , এটা যেন আমার নিঃশব্দে বলে ফেলা কাঙালপনা ; তাই না রে ?
সেবার হঠাৎ বৃষ্টিতে বুকে জ্বলছিল অহংকার ; অন্য এক স্বপ্নের কাছে তুই ও পলাশ রঙা হাসি ছড়িয়ে বিক্রি করছিলি তোর আনন্দ – সুখ ; আরও কত কি ! আমি তখন কতকালের শ্মশানে একা এভাবেই পুড়ছিলাম ; সেই দেখে দেখে !
এই একটাই দেওয়ালহীন ঘর ; আশ্চর্য রকম বৈরাগ্যে অনেকটাই রূপকথার মত ! এখানে এই ঘরে তোর শ্বাস – প্রশ্বাস একদিন ছিল ভীষণ অলিখিত সর্তহীন ….. অথচ এখন এই ঘরটা নেটওয়ার্ক ছাড়া বেমালুম নিরবতায় আহত বিষাদাকীর্ণ তুইহীন নিঃশব্দ ; নির্জন !
কিছু কিছু নির্জনতা নির্ধারিত স্তব্ধ ; একেবাকেই কথাহীন ৷ নতুবা প্রেমের কাছে অনেকটাই অহর্নিশ কৃতদাশ ! অন্তর্দহনে দগ্ধে দগ্ধে না মরেও মৃত চিরকাল ,—- যদিও কবিতার কাছে কতবার তোর জন্যে ক্ষমাও চেয়েছি হৃদয় শূন্য করে ; কতবার এই ঘরের বিছানা চাদর পুড়েছে অমনষ্কে সিগারেটের আগুনে , একমাত্র তোকে মনে করে ! স্নায়ুতে মায়াবন্ধনী তুই ; এই অবধারিত মন কষ্ট এক মূহুর্ত বিশ্রাম দেয়নি আমাকে ….. অথচ বহু দূর থেকে একই পথ ধরে চলতে চলতে গাছবৃষ্টি চোখের পাতা ভিজিয়ে ছিল ; সেটা একমাত্র তোরই জন্য হে প্রেম !
মৃত্যু মৃত্যু স্বপ্নগুলো জীবন্ত ফসিল ; এই প্রবাহমান সৃজন কষ্ট গুলো ইচ্ছানুযায়ী মরে ও বাঁচে এটা একমাত্র তোরই জন্য হে প্রেম , প্রিয় নারী ! অশরীর ভালোবাসা !!
স-মা-প্ত
_______________________________________