নিজস্ব প্রতিনিধি(সতীশ কুমার): ব্যাভিচার বা পরকীয়াকে ফের অপরাধ হিসেবে গণ্য করার সুপারিশ করল স্বরাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির যুক্তি, ‘বিবাহ একটি পবিত্র বিষয়’ এবং একে যে করেই হোক ‘রক্ষা’ করতে হবে। আর সেই কারণেই পরকীয়াকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা উচিত।
ভারতীয় দণ্ডবিধিকে ঔপনিবেশিক প্রভাবমুক্ত করে তাকে সময়োপযোগী করে তোলার লক্ষ্যে গত বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ও সাক্ষ্য অধিনিয়ম বিল আনে সরকার। বিল লোকসভায় পেশ করেই তা সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে আলোচনার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গত সপ্তাহে বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও ওই সংক্রান্ত রিপোর্টটি স্থায়ী কমিটিতে গৃহীত হয়। কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, ব্যভিচার সংক্রান্ত আইন ফিরিয়ে আনতে হবে। এই ক্ষেত্রে পুরুষ এবং মহিলা দুজনেই যাতে শাস্তি পায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
দণ্ড সংহিতা সম্পর্কিত রিপোর্টে পরকীয়াকে ফের ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে ফিরিয়ে আনার সুপারিশ সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নয় বলেই মনে করছেন বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, ওই সুপারিশ এনে সুপ্রিম কোর্টের অবমাননা করা হয়েছে।
২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, পরকীয়া বা বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ফৌজদারি অপরাধ নয়। দণ্ডবিধিতে ওই সংক্রান্ত ৪৯৭ ধারাটি অসংবিধানিক। ওই ধারায় বলা ছিল, কোনও ব্যক্তি কোনও বিবাহিত মহিলার সঙ্গে তাঁর স্বামীর অনুমতি ছাড়া সম্পর্ক স্থাপন করলে ওই মহিলার পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানা উভয়ই হতে পারে। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, ব্রিটিশদের তৈরি করা এই আইন সেকেলে, একতরফা ও বৈষম্যমূলক। এই আইন মহিলাদের মর্যাদাকে খর্ব করে। ফলে ধারাটি বাতিল করে দেওয়া হয়।
কিন্তু সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ফের ওই আইনকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘বিয়ের মতো পবিত্র প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে ওই ধারা বজায় রাখা হোক।’’ অতীতে কেবল স্বামীই পরকীয়ার অভিযোগ আনতে পারতেন। কিন্তু নতুন নিয়মে স্বামী-স্ত্রী উভয়েই একে-অপরের পরকীয়ার অভিযোগ আনতে পারবেন।