
নিজস্বপ্রতিনিধি,(রজত রায়):রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। উঠেছে বিতর্কের ঝড়। এরই মধ্যে কলম ধরলেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। বললেন, রামপুরহাটের দৃশ্য দেখে তিনি শিহরিত। বাড়ির বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে শিশুগুলোর জুতো। অঘোরে চলে গিয়েছে শিশু-সহ আট মহিলার প্রাণ।কী দোষ করেছিল তারা? কেন এভাবে তাদের মেরে ফেলা হল? প্রশ্ন তুললেন শ্রীলেখা।আনন্দবাজার পত্রিকায় অভিনেত্রী লিখেছেন, আমি কিছু বললে বা লিখলে বলা হবে বোমা ফাটালেন শ্রীলেখা। কিন্তু, আক্ষরিক অর্থে যেখানে বোমা ফাটানো হয়েছে, এতগুলো মানুষকে মারা হয়েছে, সেখানে আমার কথা বলাটা কি অন্যায়? শ্রীলেখার খোঁচা, আমি তাঁদের দেখে অবাক হই যাঁরা ক্ষমতায় থেকেও এখনও মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন। তীব্র আক্রমণ শানিয়ে শ্রীলেখা লেখেন, সাধারণ মানুষের হয়ে কথা বললেই যে বিপদ। মুখ খুললে আর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উত্তরীয় পরানো যাবে না বা পরা যাবে না।ইন্ডাস্ট্রির বিরুদ্ধে আঙুল উচিয়ে শ্রীলেখা উবাচ, ”অন্যায়ের বিরোধিতা করলে চলচ্চিত্র উত্সবের মুখ হওয়া যাবে না। তাই ইন্ডাস্ট্রির কাছ থেকে আমি কিছু আশাও করি না।” অভিনেত্রীর কথায়, ”ওঁরা নির্বাচনে জিতে নিজের আবাসনের ঘরে ঢুকে তালা বন্ধ করে। চার দেওয়ালের বাইরের কী ঘটে চলেছে, তাতে তাঁদের কিছুই যায় আসে না। ইন্ডাস্ট্রির এই নীরবতা দেখতে আমি অভ্যস্ত।” ইন্ডাস্ট্রির থেকে তাঁর প্রত্যাশ্য না থাকলেও সাধারণ মানুষ কেন চুপ? সেই প্রশ্ন তুলেছেন শ্রীলেখা। তিনি বলেন, যাঁরা ফেসবুকে বড় বড় পোস্ট করেন, তাঁরা সবাই কোথায় গেলেন? প্রশাসনের এত বড় গাফিলতি কেন কারও নজরে এল না? এই সকল মানুষরা কী শুধু ফেসবুকে নিজেদের বড়াই করতেই পারেন? যাঁরা ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ দেখে চোখের জল ফেলেছে, এই ঘটনা দেখে তাঁদের বুক কাঁপছে না কেন? এই ঘটনা নিয়েও যদি ছবি তৈরি করা হয়, তাহলেও লোকের চোখে জল আসবে। দাবি শ্রীলেখার।একেবারে নাম তুলে শ্রীলেখা লিখেছেন, ”শুনলাম, জুন মালিয়া নাকি ব্যস্ত! কথা বলার সময় নেই। নির্বাচনের আগে গ্রামে গ্রামে ঘুরে তো অনেক প্রচার করেছেন। এখন কোথায় গেলেন?” শ্রীলেখার কলমে উঠে এসেছে আনিস খানের মৃত্যুর প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, আনিসের মৃত্যুর পর পরমব্রত টুইট করে লিখেছিলেন, ‘হত্যাকারীরা কোন না কোনও দলের ছিলেন। নিহতও নির্দিষ্ট দলের ছিলেন। এইসব যুক্তি তক্কো তথ্য নিষ্প্রয়োজন। এগুলি নির্বিশেষে আনিস খানের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। অপরাধীদের শাস্তি হওয়া দরকার।’ বগটুই হত্যাকাণ্ডের পর কেন গর্জে উঠছেন পরমব্রত? এবার কেন মুখে কুলুপ? যাঁরা সাধারণ মানুষের কথা ভাবেন না তাঁরা কী ভাবে ছবি বানাবেন?শ্রীলেখা বলেন, অনেকেই তাঁকে প্রশ্ন করেন তিনি কেন ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে মেশেন না? তাঁর সাফ জবাব, আসলে এমন মানুষ তাঁর পছন্দ নয়। তাই কুকুরদের নিয়েই তাঁর গণ্ডি। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। শাসকদলকে নিশানা করে শ্রীলেখা বলেন, প্রশাসনের মদত না থাকলে এ ভাবে বাড়ির পর বাড়ি জ্বলত না। এবার দেখুন কাদের ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন। তাঁর সাফ কথা, ”আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করবই। শ্রীলেখা মিত্র এখনও বিক্রি হয়নি।”