নিজস্ব প্রতিনিধি(সতীশ কুমার): ধর্মীয় বিদ্বেষের এক নক্কারজনক দৃশ্যের সাক্ষী হতে হল দেশকে। স্কুলের শিক্ষিকার নির্দেশে ‘সংখ্যালঘু’ ছাত্রকে এসে ক্রমাগত থাপ্পড় সহপাঠীদের ! শুধু চড় মারাই নয়, সংখ্যালঘু ওই ছাত্রের সম্প্রদায় সম্পর্কে বিভিন্ন রকম কুমন্তব্য করতেও দেখা গিয়েছে তাঁরই সহপাঠীদের। আর গোটা ঘটনাক্রম ঘটেছে স্কুলের শিক্ষিকার সামনে ! বলা ভাল, তাঁর উস্কানিতেই !
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরের একটি বেসরকারি স্কুলে। জানা গিয়েছে, নামতা বলতে পারেনি এক মুসলিম পড়ুয়া। ক্লাসের শিক্ষিকা নাম তৃপ্তা ত্যাগী। নির্দেশ দেন, সহপাঠীরাই ওই পড়ুয়াকে মারধর করবে। শিক্ষিকা আরও বলেন, মুসলিম মহিলারা আসলে তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনার দিকে খেয়াল রাখেন না। সেই জন্যই মুসলিম পড়ুয়াদের পড়াশোনার মান এত খারাপ।এও দেখা যাচ্ছে যে আস্তে থাপ্পড় মারলে শিক্ষিকা রেগে যাচ্ছেন। বলছেন, এভাবে কি মারছ? জোরে মারো। এভাবে একের পর এক ছাত্র যখন ওই মুসলিম শিশুটিকে মারছে তখন সে হাউ হাউ করে কাঁদছে।
প্রশ্ন উঠছে, এভাবে ধর্মীয় বিদ্বেষের বিষ কীভাবে ছড়িয়ে দিচ্ছেন খোদ এক শিক্ষিকা ! মুজাফরগনগের পুলিশ সূত্রে খবর, শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছে উত্তর প্রদেশের স্কুল শিক্ষা দফতর। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভাইরাল ভিডিওটিতে দু’জনকে নির্দেশ দিতে দেখা গিয়েছে। একজন শিক্ষিকা। অপরজন কে, সেই খোঁজ চলছে।
ভিডিও সামনে আসার পরেই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে খবর। এই বিষয়ে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ ব্রায়েন বলেন, “ঘটনার অনেক পরে এফআইআর দায়ের করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ, কিন্তু খুবই দুর্বল ধারা আনা হয়েছে অভিযোগে। দেশের নানা প্রান্তে হিংসার কারখানা খুলেছে বিজেপি। সেখানকার ম্যানেজার হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।”
বিভেদের বিষ শিশুদের মনে বুনে স্কুলকে ঘৃণার জায়গা হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে, সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট রাহুল গান্ধীর। একইভাবে চড়া সমালোচনা সুর সাজিয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও বলেছেন, ‘ উন্নত প্রযুক্তির ভরে চাঁদে পৌঁছে গেলাম আমরা, আর উল্টোদিকে দেশে বিদ্বেষের দেওয়াল তোলা হচ্ছে। বিষয়টা পরিষ্কার, দেশের উন্নতির পথে সবথেকে বড় শত্রু হচ্ছে ঘৃণা।’