নিজস্ব প্রতিনিধি(সতীশ কুমার): সম্প্রতি নেটপাড়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিও দেখে অনেকেই ‘ছিঃ ছিঃ’ করেছেন। কী ছিল ভিডিওতে?
নেটপাড়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে অভিনেত্রী রশ্মিকা মান্দানাকে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু নেটিজেনদের আপত্তি বিষয় হল, অভিনেত্রীর পোশাক নিয়ে! দেখা যাচ্ছে রশ্মিকা লিফটের মধ্যে ঢুকছেন। পরনে তাঁর কালো রঙের পোশাক। পোশাকটির গলা গভীরভাবে কাটা। এতটাই কাটা যে ওই পোশাকের মধ্যে দিয়ে উঁকি মারছে অভিনেত্রীর স্তন-যুগল! ভিডিও ভাইরাল হতেই অভিনেত্রীকে নিশানা করেছেন নেটিজেনরা। এমন পোশাক পরা উচিত হয়নি বলে সোচ্চার হয়েছেন নীতি পুলিশরা। টেনে এনেছেন ভারতীয় সংস্কৃতির প্রসঙ্গ।
যদিও এই ছবি দেখে অনেকেই ধন্দে ছিলেন, আদৌ এটা রশ্মিকা তো! সাধারণত এই ধরনের পোশাকে দেখা যায় না তাঁকে। অনুরাগীদের সন্দেহই ঠিক প্রমাণিত হল। জানতে পারা যায়, এই ভিডিয়োর মহিলা আদপে রশ্মিকা নন। অন্য এক মহিলার ভিডিয়োয় কারসাজি করে অভিনেত্রীর মুখ বসানো হয়েছে। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই অপরাধী শাস্তি চেয়ে রশ্মিকার পাশে দাঁড়ান স্বয়ং অমিতাভ বচ্চন। উল্লেখ্য়, ‘গুডবাই’ ছবিতে সিনিয়র বচ্চনের সঙ্গে স্ক্রিনস্পেস শেয়ার করেছেন রশ্মিকা মন্দানা। অভিনেত্রীর হয়ে এবার আইনি পদক্ষেপের দাবি তুললেন অভিভাবকসম বচ্চন। অমিতাভের দাবি, “এই বিকৃত ভিডিওর নেপথ্যে যে, তার বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।”
জানা গেছে, ‘ডিপফেক’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে রশ্মিকার ভিডিও বানানো হয়েছে। সাংবাদিক অভিষেক কুমার প্রথম এই বিষয়টি নজরে আনেন। তিনি জানান, ওই ভিডিওটি ভুয়ো। এই ভিডিও প্রথম ৮ অক্টোবর ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছিলেন জারা প্যাটেল নামে এক মহিলা। সেই ভিডিওতেই জারার মুখ পাল্টে বসিয়ে দেওয়া হয় রশ্মিকার মুখ। ডিপফেক হল এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে এআইয়ের মাধ্যমে একজনের ভিডিওতে অন্যজনের অন্যজনের মুখ বসিয়ে দেওয়া যায়। আপাতভাবে ভুয়ো ভিডিওটি দেখে বোঝার উপায় থাকে না সেটি আসল না নকল। তবে রশ্মিকার এমন ‘আপত্তিকর’ ভিডিও কে বানাল, তা এখনও জানা যায়নি।
এ বার নিজের এই বিকৃতি ছবি প্রসঙ্গে বিবৃতি দিয়ে কী জানালেন অভিনেত্রী? অভিনেত্রী নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে বিবৃতি দিয়ে লেখেন, ‘‘আমার যে ডিপফেক ভিডিয়ো ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে, সেটা নিয়ে কথা বলতে গেলেও ভীষণ খারাপ লাগছে। আমি ব্যথিত। এই ঘটনা আমার কাছে খুবই ভয়ের। শুধু আমার একার জন্য নয়, যাঁরাই সারা ক্ষণ ক্যামেরার সামনে রয়েছেন তাঁদের জন্য। ভাবলেই ভয় করছে, কী ভাবে প্রযুক্তির অপব্যবহার করা হচ্ছে। আজ একজন নারী ও অভিনেত্রী হিসাবে আমি আমার পরিবার, বন্ধু-বান্ধবদের কাছে কৃতজ্ঞ, যাঁরা আমাকে এই সময় সমর্থন করেছেন আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু ভাবুন, যদি আমি একজন স্কুল-কলেজে পড়া ছাত্রী হতাম! আমার তো মাথা কাজ করত না এই পরিস্থিতিকে সামাল দেওয়ার। আমাদের সকলের উচিত সমষ্টিগত ভাবে এগিয়ে এসে এই ধরনের সমস্যা নিয়ে কথা বলা।’’