নিজস্ব প্রতিনিধি(সতীশ কুমার): ১২ দিনের বিদেশ সফর সেরে কলকাতায় ফিরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । শনিবার সন্ধেবেলা নির্ধারিত সময়েই দমদম বিমানবন্দরে নামে তাঁর বিমান। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফিরেছেন সফরসঙ্গী শিল্পপতি ও প্রতিনিধিরাও। এবারের স্পেন, দুবাই সফর থেকে ফিরে বেশ খুশি মুখ্যমন্ত্রী। বিমানবন্দরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানালেন, ”আমাদের এবারের সফর খুব ভালো হয়েছে। বিদেশে অনেকটা কাজ হয়েছে বাংলার জন্য। এত সফল সফর আগে দেখিনি। আমাদের বিজিবিএস নিয়ে মাদ্রিদ, স্পেন, দুবাইয়ের শিল্পপতিদের সঙ্গে খুব ভাল আলোচনা হয়েছে। তাঁদের আমি আমন্ত্রণও জানিয়েছি। সবমিলিয়ে সফর খুব ভালো হয়েছে।”
স্পেনের মাদ্রিদ ও বর্সোলেনা হয়ে দুবাই গিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে একাধিক বাণিজ্যিক গোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। শুধু তাই নয়, বাংলার ফুটবল পরিকাঠামোতে বদল আনতে লা লিগার সঙ্গে বৈঠকও করেন মমতা। সঙ্গে ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। জানা গেছে, কলকাতায় ফুটবল আকাডেমি তৈরি করতে লা লিগার সঙ্গে চুক্তি সই করেছে রাজ্য সরকার।
মুখ্যমন্ত্রীর সফর-দলে ছিলেন কলকাতা বইমেলার আয়োজক সংগঠন পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের দুই কর্তা ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় এবং শুধাংশু দে। বইয়ের প্রচার, প্রসার, দু’দেশের সাহিত্যপ্রেমীদের মধ্যে চিন্তাভাবনা আদানপ্রদান বিষয়ক ‘মউ’ স্বাক্ষর হয়েছে মাদ্রিদে।
আমিরশাহির বৈদেশিক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী থানি বিন আহমেদ আল জ়েয়াউদির হাতে নিজের আঁকা ছবি তুলে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী মাদ্রিদে পৌঁছনোর অব্যবহিত পরেই ইংল্যান্ড থেকে সেখানে পৌঁছন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সৌরভের সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী ডোনা এবং কন্যা সানা। মাদ্রিদে ক্রিকেট বিগ্রহ সৌরভকে দেখা গেল ভিন্ন দুই ভূমিকায়। এক, লা লিগার সঙ্গে রাজ্য সরকারের মউ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দাদা হয়ে উঠেছিলেন বাংলার ফুটবলের লোক। যে ভাবে তিনি ফুটবলের উন্নতির জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন তা অনেকেরই ধারণার মধ্যে ছিল না। আর দুই, বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে মহারাজ আবির্ভূত হয়েছিলেন বণিক অবতারে।
বার্সেলোনা থেকে দুবাই পৌঁছন মমতা। মরু শহরের বাণিজ্য সম্মেলনের আগে মমতার সঙ্গে বৈঠক হয় লুলু শিল্পগোষ্ঠীর। তারা নিউটাউনে একটি শপিংমল নির্মাণ করবে বলে কথা দিয়েছে। তা ছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হয় আমিরশাহির বৈদেশিক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী থানি বন আহমেদ আল জেয়াউদির। বাণিজ্য সম্মেলনেই মমতা তাঁকে ‘কিউট’ বলেন।জেয়াউদি বলেন, ‘‘ভারত-আমিরশাহি বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ছে। জনসংখ্যার বিচারে ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম রাজ্য পশ্চিমবঙ্গকে আমরা বিশেষ নজরে দেখছি।’’ পরে দুবাইয়ের প্রবাসীদের সঙ্গে মিতিত হন মমতা। সেখানে পরিবেশিত হয় রাজ্য সঙ্গীত ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’। আমিরশাহির বৈদেশিক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী থানি বিন আহমেদ আল জ়েয়াউদির হাতে নিজের আঁকা ছবিও তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।