নিজস্ব প্রতিনিধি(রজত রায়): সন্দেশখালির ভাইরাল ভিডিও নিয়ে বিজেপিকে কড়া ভাষায় তোপ দাগলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । শনিবার সন্দেশখালির ভাইরাল ভিডিও নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন অভিষেক। বলেন, ‘বাংলার রাজনীতি এত নীচে নামবে ভাবতে পারিনি। বিজেপির একটা নির্লজ্জ চেষ্টা প্রকাশ্যে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমদিন থেকে বলে আসছেন, সন্দেশখালিতে যা বলা হচ্ছে, তা হয়নি।’ অভিষেকের কথায়, ‘নির্লজ্জতার সমস্ত নজির ভেঙে দিয়েছে। বিজেপির মণ্ডল সভাপতি বলছেন সাজানো ঘটনা। যাঁকে নির্যাতিত বলে দেখানো হচ্ছে। তিনি বলছেন, তাঁর সঙ্গে কিছু হয়নি। ভিডিওতে উনি বলেছেন, ‘তাবড় তাবড় মাল’কে গ্রেপ্তার করানোর কথা। গঙ্গাধর বলেছেন, শুভেন্দু তাঁদের বলেছেন, তাবড় তাবড় মাল গ্রেপ্তার না করালে তোমাদের কিছু হবে না।’
অভিষেক বলেন, ‘গঙ্গাধর বলেছে ২০০০ টাকা দিয়ে অভিযোগ দায়ের করিয়েছে বাংলায়। রেখা পাত্র যিনি ওই এলাকার লোকসভা ভোটের প্রার্থী তিনিও ওই ২০০০ টাকার বিনিময়েই অভিযোগ করেছিলেন। পিঠে পাটিসাপটা বানানো নিয়ে কত কথা বলেছিল সংবাদমাধ্যম। কীভাবে খবর প্রকাশ হয়েছিল! আর এখন এরা বলছে ধর্ষণই হয়নি। উলটে ধর্ষণ নিয়ে যাতে কোনও পরীক্ষা দিতে না হয়, সে জন্য ৭ মাস আগের অভিযোগ দায়ের করেছে।’
অভিষেক বলেন, ‘পরিকল্পনা করে সন্দেশখালিতে রোবটও নামিয়ে দিল ওরা। যেন মনে হচ্ছিল চাঁদে চন্দ্রযানের প্রজ্ঞান নামছে। এই সব কিছুই দেখানোর জন্য। সব পরিকল্পিত। শুভেন্দু তো ভিডিওতে বলেছেন ৩৫৫ জারির পরিস্থিতি তৈরি হবে। প্রায়ই এই সব বলছেন। বলে থাকেন। এমনও বলেন ২০২৬ সালে ভোট হবে না বাংলায়। তার আগেই সরকার ভেঙে দেব।’
অভিষেক বলেন, ‘বাংলাকে কলুষিত করার জন্য বিজেপির পাশাপাশি বিচারমাধ্যমের একাংশও দায়ী বলে মনে করি আমি। এ কথা বলার জন্য যদি আমি আদালত অবমাননার দায়ে পড়ি, তবে পড়ব, কিন্তু সত্যি কথা বলা থেকে আমাকে আটকানো যাবে না। যারা নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে মহিলাদের সম্ভ্রম ২০০০ টাকায় বিক্রি করেন, সেই দলকে ভোট দেওয়ার আগে দশবার ভাববেন।’
অভিষেকের কথায়, ‘গঙ্গাধরকে চিনতেই পারছেন না বিজেপির নেতারা। বলছেন, ‘‘ওকে চিনি না। বুথে কাজ করে কি না তাও জানে না। অথচ বিকেলে নিজের ভিডিয়ো প্রকাশ করে সেই গঙ্গাধরই বলছে তিনি বিজেপির মণ্ডল সভাপতি।’ অভিষেক বলেন, ‘বিজেপির নেতারা বলতেন, সন্দেশখালি করবে তৃণমূলের চেয়ার খালি। আর আজকের ভিডিও বুঝিয়ে দিয়েছে বিজেপি দলটাই জালি।’
অভিষেক বলেন, ‘বাংলায় ওরা থাকছে, খাচ্ছে আর বাংলার নাম কলুষিত করছে। আসলে বাংলাকে কলুষিত করে দখল করার পরিকল্পনা ছিল বিজেপির। যেভাবে, রাজস্থান, কর্ণাটক দখল করেছে সেভাবেই বাংলাও দখল করবে। কিন্তু বাংলার দখল নেওয়া অত সহজ নয়।’ বিজেপিকে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, ‘আপনারা সবাইকে জেলে ঢোকান কিন্তু বাংলার অসম্মান করবেন না। খালি কয়েকটা ভোটের জন্য যা নয় তাই করা হচ্ছে। সমস্যা আদৌ হয়েছে কি না যাচাই না করেই সিবিআই হয়ে যাচ্ছে। সংবিধান মেনে পুলিশকে সুযোগও দেওযা হচ্ছে না। তদন্ত করার সুযোগই দেওয়া হচ্ছে না।’ শুভেন্দুকে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, ‘ওই বেইমানটাকে বলবেন, আমি ওকে বেইমান বলছি, গদ্দার বলছি, ঘুষখোর বলছি। কী করবে করে নিক।’