নিজস্ব প্রতিনিধি(সতীশ কুমার): অবশেষে দেখা মিলল উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের। ১০ দিন পর আটকে পড়া শ্রমিকদের প্রথম ছবি পাওয়া গেল। গতকাল রাতে একটি ক্যামেরাকে ৬ ইঞ্চি পাইপের মাধ্যমে সুড়ঙ্গের ভিতরে পাঠানো হয়। যে ক্যামেরার মাধ্যমেই পাওয়া গিয়েছে আটকে পড়া শ্রমিকদের ছবি। পাশাপাশি, ওই পাইপের মাধ্যমে কাঁচের বোতলে করে গতকাল প্রথমবার শ্রমিকদের জন্য গরম খাবার পাঠানো সম্ভব হয়। গতকাল রাতে শ্রমিকদের জন্য পাঠানো হয় খিচুড়ি। এতদিন পর্যন্ত সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের জন্য পাঠানো হচ্ছিল ড্রাই ফ্রুটসের মতো শুকনো খাবার ও জল।
জানা গিয়েছে, একটি এন্ডোস্কোপিক ক্যামেরা পাঠানো হয়েছিল ৬ ইঞ্চি পাইপের মাধ্যমে। এর আগে আটকে পড়া শ্রমিকদের খোঁজ পাওয়ার জন্য সুড়ঙ্গের ভিতরে ড্রোন পাঠানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয়নি। সুড়ঙ্গের ভিতর ধ্বংসাবশেষের মধ্যে দিয়ে বেশি দূর এগোতে পারেনি ড্রোন। একটি ড্রোন খারাপ-ই হয়ে যায়! এবার এন্ডোস্কোপিক ক্যামেরায় ধরা পড়ল আটকে পড়া শ্রমিকদের ছবি।
ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, সুড়ঙ্গ থেকে উঁকি মেরে পাইপটি দেখছেন শ্রমিকেরা। তাঁদের উপর থেকে চেঁচিয়ে বলা হচ্ছে ক্যামেরা পাঠানোর কথা। কী ভাবে সেই ক্যামেরা ব্যবহার করবেন, তা-ও চেঁচিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। শ্রমিকদের প্রথমে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, ‘‘সকলে ঠিক আছেন?’’ শ্রমিকেরা ইতিবাচক উত্তরে দিলে তাঁদের বলা হয়েছে, ‘‘ক্যামেরায় নিজেদের দেখান। ক্যামেরাটি পাইপ থেকে হাত বাড়িয়ে তুলে নিন এবং সুড়ঙ্গের ভিতরে নিয়ে যান। বাকিদের সকলকে দেখান। আমরা আপনাদের দেখতে পাচ্ছি। আপনারা কেউ ভয় পাবেন না। সবাইকে সুস্থ ভাবে বাইরে বার করে আনা হবে।’’
এর পরেই দেখা যায়, যাঁরা উঁকি মারছিলেন, তাঁদের মধ্যে থেকে এক জন পাইপে হাত ঢুকিয়ে ক্যামেরা তুলে নিচ্ছেন। তার পর সুড়ঙ্গের ভিতরে কী চলছে, সব দেখা গিয়েছে। যাঁরা সুড়ঙ্গে আছেন, প্রত্যেককে ক্যামেরার মাধ্যমে দেখাতে বলেন উদ্ধারকারীরা। ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসে সুড়ঙ্গের ভিতরের সম্পূর্ণ দৃশ্য।
গত ১২ নভেম্বর দিওয়ালির দিন দুর্ঘটনার পর থেকেই ভিতরে আটকে পড়া ৪১জন শ্রমিককে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সোমবার নতুন পাইপের মাধ্যমে সুড়ঙ্গের ভিতর পাঠানো হয়েছে একটি মোবাইল ফোন এবং চার্জার। সুড়ঙ্গের অন্তত ৬০ মিটার গভীরে শ্রমিকেরা আটকে আছেন। এখনও পর্যন্ত মাত্র ২৪ মিটার খোঁড়া গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিয়মিত উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে উদ্ধারকাজের অগ্রগতির খবর নিচ্ছেন। ফোন করেছেন মঙ্গলবারও। উপর দিক থেকে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হবে। জায়গা চিহ্নিত করা হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবারই নতুন করে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে দেওয়া হয়েছে সুড়ঙ্গের কাছে।