
নিজস্ব প্রতিনিধি(দেবযানী): সুরজগতে নক্ষত্রপতন। প্রয়াত লতা মঙ্গেশকর । রবিবার সকাল ৮টা ১২ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সুর সম্রাজ্ঞী। মৃত্যুকালে কিংবদন্তী এই সঙ্গীতশিল্পীর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসার পরই, তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। চলতি বছরের জানুয়ারির গোড়ার দিকে মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃদু উপসর্গ নিয়ে আইসিইউতে ভর্তি হতে হয়েছিল তাঁকে। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন বলে ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন। কিন্তু বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই তাঁর শারীরিক অবনতি হয়। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া গোটা দেশেই। ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে এক আলাদা সম্পর্ক ছিল লতার।ক্রিকেটকে যেমন ভালোবাসতেন লতা, তেমনই একটা আলাদা ভালোবাসা ছিল সচিনের প্রতিও। লতার হৃদয়ে সচিনের জন্য একটা আলাদা জায়গা ছিল। সচিনকে তিনি ছেলের মতো মনে করতেন। লতাকেও সচিন ‘আই’ ডেকেছেন আজীবন। আই শব্দের বাংলা তর্জমা মা। শেষ বার তাঁর দেখা পেতে হাসপাতালে পৌঁছে যান সচিন তেন্ডুলকর। মাস্কে ঢাকা মুখেও বিষাদের ছায়া। কার্যত তিনি আজ ‘মাতৃহারা’।সচিন লতাকে যেদিন আই বলে ডেকেছিলেন, সেইদিনটা কোনওদিনও ভুলতে পারবেন না তিনি। এমনটা জানিয়েছিলেন একবার সুরসম্রাজ্ঞী।এই ব্যাপারে একবার সাক্ষাৎকারে লতা বলেছিলেন, ‘সচিন আমাকে তাঁর মায়ের মতোই ভালোবাসে এবং সম্মান করে। আর আমিও সচিনকে নিজের ছেলের মতোই দেখি। একজন মা যেমন নিজের ছেলের জন্য প্রার্থনা করেন, ওঁর জন্য আমিও ঠিক তেমনটাই করি। সচিন যেদিন আমাকে প্রথম ‘মা’ বলে ডেকেছিল, সেইদিনটা আমি কোনওদিনও ভুলব না। আমি কোনওদিনই ভাবতে পারিনি ওঁর থেকে আমি এই ডাক শুনতে পাব। ওই ডাক শুনে যেমন চমকে গিয়েছিলাম, তেমন আনন্দও পেয়েছিলাম। এইটুকু বলব ওঁর মতো ছেলে পেয়ে আমি সত্যি ধন্য।’সচিনকে শুধু ছেলের মতো স্নেহই করতেন না লতা। একবার সচিনকে ভারতরত্ন দেওয়ার আর্জিও জানিয়েছিলেন তিনি। মাস্টার ব্লাস্টার ভারতরত্ন খেতাব পাওয়ার প্রায় ১২ বছর আগে এ ব্যাপারে লতা বলেছিলেন, ‘আমার কাছে কিন্তু বহু বছর ধরেই সচিনই আসল ভারতরত্ন। দেশের জন্য ও যা যা করেছে, তা খুব কম মানুষই করতে পেরেছে। ভারতরত্ন সম্মান পাওয়ার যোগ্য দাবিদার ও। আমাদের সকলকে ও প্রতিটা মুহূর্তে গর্বিত করেছে।’ক্রিকেটের প্রতি লতার এমন ভালোবাসা ছিল, যার জন্য তিনি ভারতের ৮৩-র বিশ্বকাপের সময় দিল্লিতে একটি কনসার্ট করেছিলেন। সেই কনসার্ট থেকে প্রাপ্ত অর্থ তিনি বিসিসিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। এবং বোর্ডে যার ফরে দলের প্রত্যেক প্লেয়ারকে ১ লক্ষ টাকার আর্থিক পুরস্কার দিতে পেরেছিল।




