নিজস্ব প্রতিনিধি(সতীশ কুমার)গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ অফিসার ও নাবিক মিলিয়ে ভারতীয় নৌসেনার প্রাক্তন আট কর্মীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে কাতারের আদালত। গত বছর থেকে জেলবন্দি ছিলেন তাঁরা। আদালতে এদের বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছে পশ্চিম এশিয়ার এই দেশ।
কাতারে ভারতীয় নৌসেনার ৮ জনে গ্রেফতারি ও তাঁদের সাজা ঘোষণা নিয়ে এবার মুখ খুলল দিল্লি। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে সাফ জানানো হয়েছে যে, এই সাজা ভারতকে ‘হতবাক’ করেছে। দিল্লি এও জানিয়েছে, যে সাজার পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে ভারত। উল্লেখ্য, ভারতীয় নৌসেনার এক অফিসার সমেত ওই ৮ জনকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে কাতারের কোর্ট।
দিল্লি ওই ৮ ভারতীয়ের মৃত্যুদণ্ড নিয়ে মুখ খুলেছে। ভারতের বিদেশমন্ত্রক বলছে, ‘আমরা গভীরভাবে হতবাক ওই ফাঁসির সাজা নিয়ে। আমরা বিস্তারিত তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছি। আমরা পরিবারগুলির সদস্যদের সঙ্গে যোগেযাগে রয়েছি, আর আইনি টিমের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখেছি। আইনি কী বিধি রয়েছে, সেদিকে তাকিয়ে রয়েছি আমরা।’ দিল্লি স্পষ্ট জানিয়েছে, ‘এই মামলাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছি আমরা। আর এটি খুব কাছ থেকে নজরে রাখছি। আমরা দূতাবাস ও আইনি সহায়তা ধরে রাখব। এই বিষয়ে কাতারের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।’ জানা গিয়েছে, নৌসেনার ধৃত ৮ প্রাক্তন ভারতীয় নৌসেনা কর্মী হলেন, ক্যাপ্টেন নভতেজ সিং গিল, ক্যাপ্টেন বীরেন্দ্র কুমার বর্মা, ক্যাপ্নেট সৌরভ বশিষ্ট, কামান্ডার অমিত নাগপাল, কমান্ডার পূর্ণেন্দু তিওয়ারি, কমান্ডার সুগুনাকার পাকালা, নাবিক রাগেশ, কমান্ডার সঞ্জীব গুপ্তা।
◆কাতারের অভিযোগ, ভারতীয় নৌসেনার এই প্রাক্তন কর্মীরা ইজরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করছিলেন। গত কয়েক বছর ধরেই ইটালীয় উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ডুবোজাহাজ তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে কাতার। সেই প্রকল্প থেকে তথ্য পাচারের অভিযোগ রয়েছে এই আটজনের বিরুদ্ধে।
◆নয়াদিল্লির তরফে অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের এক পদস্থ অফিসারের কথায়, ‘আমরা দোহাকে এটা বোঝাতে চেষ্টা করেছিলেন যে কোনও ভারতীয় গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে জড়িত নয়। কিন্তু তার পরও তাঁদের সিদ্ধান্তে কোনও বদল হয়নি।
◆সাজাপ্রাপ্ত আট ভারতীয় কাতারের গ্লোবাল টেকনোলজিস অ্যান্ড কনসালটেন্সি সার্ভিসেস নামের একটি সংস্থায় চাকরি করতেন। কাতারের সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন ধরনের পরিষেবা দেওয়ার সঙ্গে এই প্রতিষ্ঠান যুক্ত বলে জানা গিয়েছে।
সাজাপ্রাপ্তদের পরিচয়
ফাঁসির সাজা হওয়া আটজনের মধ্যে চারজন ভারতীয় নৌসেনায় কমোডর পদে ছিলেন। তাঁরা হলেন, অমিত নাগপাল, পূর্ণেন্দু তিওয়ারি, সুগুণাকর পাকালা ও সঞ্জীব গুপ্ত।
অন্যদিকে নভতেজ সিং গিল, বীরেন্দ্র কুমার ভার্মা ও সৌরভ বশিষ্ঠ ছিলেন ক্যাপ্টেন পদে। এছাড়া ফাঁসির সাজা হওয়া রাগেশ ছিলেন নৌসেনার নাবিক পদে।