News Bharat 24 hrs”- Present , শারদ ১৪৩০ “পুজোর কবিতা” নিয়ে হাজির দু’ই বাংলার “কবিতার রাজপুত্র”- বিদ্যুৎ ভৌমিক’- এর একগুচ্ছ নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ কবিতা ?️
_________________________
কবি বিদ্যুৎ ভৌমিক”- এর একগুচ্ছ শ্রেষ্ঠ কবিতা …..
_________________________
_________________________
মেঘ পালক ও বৃষ্টি ধ্বনি
_________________________
চোখ বিছিয়ে অন্তর্হিত ; হাত এগিয়ে যেইনা ধরতে যাব , স্বপ্ন যেন সাদা পৃষ্ঠায় এ’ভাবেই কুপোকাত্ ! তবুও যেন এই ঘুমন্তে শ্রবণ দেখা ; নেহাতি হাজার কথার বর্ণিত আঁকিবুকি ,—-
আকাশটা ঠিক আগের মতোই এক শারীরীক রঙ বদলে ঐতিহাসিক ! মনের ভেতর মন রাঙিয়ে আনন্দে ডুবু-ডুবু ,—-
আকাশটা সে-ই পদ্য পাড়ায় ইচ্ছে করেই বুক পেতেছে সোহাগ দিতে আমার কাছে ! ও-ই আকাশের সুদূর থেকে বৃষ্টি ঝরে একই ধারায় ; হঠাৎ যেন কি হচ্ছিল সেই ধ্বনিতে মন ডুবিয়ে এই আমিটার অতলান্তে !
মেঘ পালকে ভাসছি আমি ; অতীত এবং ভবিষ্যতে ! অন্য কোন ইচ্ছা গুলো ভরদুপুরে তোর এঁকেছে জ্যোৎস্না শরীর , এই জন্যেই ভেতরশুদ্ধ ঋণী রইলাম প্রিয়ংবদা ; সবটুকুই পাগল আবেগে !
কতবারযে তোকে পেয়েছি মেঘ সরিয়ে ; গভীর থেকে স্বভাবতই এভাবে ঠিক মন পুড়েছে ,—– অসুখটা যে পরমুখোপেক্ষী ; এটাওতো আগে বুঝিনি !
বৃষ্টি বৃষ্টি চোখ খানি তোর ; বেশি বললে বিশ্বব্যাপী ! ওই চোখেতে সারা বছরই আমার কাছে আষাঢ় – শ্রাবণ ,—- যদিও ঠিক এই সময়ে বাতাস হতে ইচ্ছা করে ; একমাত্র তোর জন্যে প্রিয়ংবদা !
এইতো আমার ভিতরশুদ্ধ তুই ছাড়া কেউ নেই ,—– আমার যত দোষগুলোকে আকাশ তারায় গুণন্তি করে মিলিয়ে নিলাম ; হেয়ালী নয় , সত্যি বলছি প্রিয়ংবদা ! এবার আমায় ক্ষমা করে দে ; তোর শরীরে ভাসার জন্য পুণ্যবান হতে দে !
গোটা রাতটা আমার মতোই অর্ধেক অবিশ্বস্ত ; তবু আমায় ক্ষমা করিশ ঘুম হারানো নির্ঘুমেতে এমনি ভাবে ,—– মেঘ যেন সেই তেপান্তরে উড়তে উড়তে অনেকটা দূ-র প্রেম প্রবাহে ; অস্পষ্ট কুমারী ! এই ঘরেরই এই বিছানায় অহরাত্রি তোরই স্মৃতি ; কি করে যে ভুলতে পরি প্রিয়ংবদা ? বন্ধ চোখের ভেতর থেকে ক্রমাগত একই ধ্বনি ; সঙ্গী কিম্বা সহপাঠী ,—-
যদিও আমার এই চিঠিতে আসা যাওয়ার চেনা পথটা বৃষ্টির শব্দে শব্দে কি ভাবে যে দুঃস্বপ্নের ভেতর মুছে গেল ! একমাত্র তুই সাক্ষী থাকলি ওরে পাগলী !!
_________________________
__ষড়রিপু এবং কবিতার জরায়ু
_________________________
ভাঁজপত্রে ওপ্রান্ত দিয়ে ভেতর গুপ্ত পদচারণা ; নত হয়ে মাটির কাছে চেয়েছি জ্ঞানপুস্তক ! শরীর গন্ধে বাতাস ভেসেছে ওই সেখানে , হাত ধরে নিয়ে এলাম পদ্মচক্রের সাতরঙা পরীকে …..
কবিতার জরায়ু থেকে মন পোড়া দুরগন্ধ চিরমুগ্ধ দর্পণে নৃশংস সুন্দর দেখায় ; তবুও এঁকে নিতে হয় বিজ্ঞাপনের নগ্ন প্রতীমার ঋতুবতী কুমারী সোহাগ !
বৃষ্টির ভেতর চাঁদ ভাসে দস্যুমেঘের বুকে ,—- ওর মুন্ডু – রক্ত – ধড় বিনম্র একেকার ! তাই কালনিসিন্ধা পাতা চিবিয়ে অন্য ঘরে উঁকিমামার স্বভাব ভুলি ; অন্য এক শরীর সামনে ধরা পরলে !
শেষ স্তবকে শুদ্ধ শব্দের রূপকথা ; যোনির উপমা ভরা স্বপ্লাভ প্লাবন ,—- সেখানেও স্পষ্টতই অন্তহীন শূন্যতা ; যতদূ-র বোধের মধ্যে হৃদয়ঙ্গম অসুখ নির্ঘুম – নির্ঘুম !
এবার নাভিমূলে জেগে ওঠে প্রেতীনীরা ! ওখানে কিছু কিছু রাত তারাদের ঠুনকো উপহাস ; অচেনা অন্ত্যমিলে লেখা ৷
সেখানে আমিও কবিতার নির্মাণ নিয়ে কাঙালপনা করেছি রক্তাক্ত হৃদয়ের কাছে !
নিঃশব্দে ঈশ্বরের হাত চেপে ধরতেই ; গোপনাঙ্গ পেঁচিয়ে ধরে স্মৃতিসর্পিনী ,——
আমার সাথে অসংজ্ঞায়িত যাবতীয় অশরীর স্মৃতি ও প্রতিটা জন্মের মৃত্যুর ; সেজন্য সময় কাটেনা দুঃখে – অভিমানে !
মনের পোশাক খুলে উলঙ্গ হয়ে ঘুরেছি বেশ কিছু কাল ; কবিতাগুলো অসুখের ভেতর অহর্নিশ এভাবেই মৃত অথচ জীবীত ,——
বেঁচে উঠি সম্পূর্ণ বায়বীয় হয়ে ; যেভাবে উচ্চারণ করি বৃষ্টির ভেতর প্রিয় কবিতার শেষ লাইন ! সেটাও ভিজে ওঠে আমার কান্নায় …..
চোখের মধ্যে হঠাৎ যেন বিধিবদ্ধ পাপ কথা বলে !!
_________________________
মৃত্যু ধ্বনি ও বিদেহী অনুভূতি
_________________________
মন থেকে কবেই হারিয়েছে কবিতার লুকানো বয়স ! যদি সময় চিনে চিনে দু’চোখে মৃত্যুর অসুখ মাখি ; তবে কী আরোপিত চিন্তায় দরকার মতো ডুব দেবে অবিকল ফেলে আসা আঠাশটা বছরের জন্মঋণ ? এই ভাবে দহনে বিমূঢ় কষ্টে স্মৃতিরা কাঁদে ! একই ভাবে রাত নিয়ে প্রতি পদে অতলান্তে পঙ্গু হয়ে অনেকটা চলা ,—— একই পথে শহরতলির রোদ ও বৃষ্টি ; অবগাহনে চোখ স্তব্ধ এতকালের কবিতাগুলোর কঠিনতম নীরবতা ! সেই’- যে অসংখবার মৃত্যুর একই পথে আমিহীন অন্য পৃথিবী ; অলৌকিক নগ্ন সাহসী ! এভাবেই ছায়াময় ঝাপসা স্মৃতির মধ্যে আমার ঘোরাফেরা থেমে যাওয়া সেই বয়সে !!
শূন্যের মধ্যে নেপথ্যে আয়নায় আঁকি মৃত্যু ছবি ! শ্মশান থেকে চলে আসার পর অদূরে গভীরতা ভরা নীরবতা ; নৈঃশব্দ্যে নিবিড় , তবুও এই পথে চোখের স্তব আমার প্রতিটা মৃত্যুর আশ্চর্য হেয়ালী নিয়ে মেতে থাকে ! একি আমি ; যতটা বিমূর্ত ততোটাই নিঃশ্চুপ উলঙ্গ !
আত্মার নিরাকার ব্যাথার দাগ গুলো থেকে গেছে একটাই মনে ; বদলেছে সময় অসময়ে শরীর , রক্ত , শিরা – উপশিরা ! তবুও মৃত্যুর ইচ্ছা নিয়ে মরি মরণের বহু আগে !
একই কথা বারেবারে বুকের প্রশ্বাসে ফিরে ফিরে আসে ; কার্যত ভিন্ন ভিন্ন আকৃতি নিয়ে যৌন দরজা দিয়ে পৃথিবীতে প্রবেশ ! এভাবেই জন্মের বহু আগে মৃত্যুর বীজ বপন ; কিছুই সত্য নয় ! আমি হীন আমিতেই পরে থাকা একান্নভাগ গোপনতা নিয়ে !
এই মৃত্যু গুলো প্রতিবার শূন্য দিয়ে মন পোড়ায় , প্রতিবার সমৃতিকে সান্ত্বনা দেয় আমার বিদেহী প্রেত ! নতুন করে ঘরে ফেরার দুঃস্বপ্ন জ্বলে ওঠে দূরবর্ত্তী শ্মশানে ! সেখানে চিতার আগুনে রচিত হচ্ছিল আমার আগামী জন্মের দিনক্ষণ ! এরপর ; সবটাই বিস্মৃতির অবিশ্বাসে ঢাকা সময় ও সোভ্যতা !!
_________________________
অস্বীকার তো করিনি তোকে
_________________________
একটা ছায়ার উপর দাঁড়িয়ে মনে হল যেন আমিও কৃপাপদহীন ; অশরীরী ! কবেকার মনটুকু জটিল সময়ের ভেতর দিয়ে থেকে থেকে ভুলে গেছে নিজেকে নিজেই ,—– এই মন দেহশূন্য নামগোত্রহীন অপ্রমেয় বিদেহী !
তুই অস্বীকার করলেও , না করলেও আমি প্রাচীন ভাষ্কর্যের মত এভাবেই একা ও একক রোদ বৃষ্টিতে নিঃসঙ্গ ! মন খারাপের গন্ধে নির্ঘুমে একাই থেকেছি স্মৃতিবাস সম্মেলিত ; এই নৈমিত্তিক কারণে তোকে ছুঁয়ে দেখার সামর্থ্য হয় নি একবারও ….. তবুও এই প্রেমগুলোতে তুই-ই যেন কুয়াশা মেখে অস্পষ্ট ভাসমান এখন !
কবিতার পাতায় পাতায় বুদ্ধিদীপ্তা সুন্দরি তুই , এটা যেন আমার নিঃশব্দে বলে ফেলা কাঙালপনা ; তাই না রে ?
সেবার হঠাৎ বৃষ্টিতে বুকে জ্বলছিল অহংকার ; অন্য এক স্বপ্নের কাছে তুই ও পলাশ রঙা হাসি ছড়িয়ে বিক্রি করছিলি তোর আনন্দ – সুখ ; আরও কত কি ! আমি তখন কতকালের শ্মশানে একা এভাবেই পুড়ছিলাম ; সেই দেখে দেখে !
এই একটাই দেওয়ালহীন ঘর ; আশ্চর্য রকম বৈরাগ্যে অনেকটাই রূপকথার মত ! এখানে এই ঘরে তোর শ্বাস – প্রশ্বাস একদিন ছিল ভীষণ অলিখিত সর্তহীন ….. অথচ এখন এই ঘরটা নেটওয়ার্ক ছাড়া বেমালুম নিরবতায় আহত বিষাদাকীর্ণ তুইহীন নিঃশব্দ ; নির্জন !
কিছু কিছু নির্জনতা নির্ধারিত স্তব্ধ ; একেবাকেই কথাহীন ৷ নতুবা প্রেমের কাছে অনেকটাই অহর্নিশ কৃতদাশ ! অন্তর্দহনে দগ্ধে দগ্ধে না মরেও মৃত চিরকাল ,—- যদিও কবিতার কাছে কতবার তোর জন্যে ক্ষমাও চেয়েছি হৃদয় শূন্য করে ; কতবার এই ঘরের বিছানা চাদর পুড়েছে অমনষ্কে সিগারেটের আগুনে , একমাত্র তোকে মনে করে ! স্নায়ুতে মায়াবন্ধনী তুই ; এই অবধারিত মন কষ্ট এক মূহুর্ত বিশ্রাম দেয়নি আমাকে ….. অথচ বহু দূর থেকে একই পথ ধরে চলতে চলতে গাছবৃষ্টি চোখের পাতা ভিজিয়ে ছিল ; সেটা একমাত্র তোরই জন্য হে প্রেম !
মৃত্যু মৃত্যু স্বপ্নগুলো জীবন্ত ফসিল ; এই প্রবাহমান সৃজন কষ্ট গুলো ইচ্ছানুযায়ী মরে ও বাঁচে এটা একমাত্র তোরই জন্য হে প্রেম , প্রিয় নারী ! অশরীর ভালোবাসা !!
স-মা-প্ত
?️
_________________________