_______________________________________
কবি বিদ্যুৎ ভৌমিক”- এর একগুচ্ছ শ্রেষ্ঠ কবিতা
________________________________________
শুধু প্রিয়ংবদার জন্য
________________________________________
সঙ্গোপনে অফুরান চেয়ে থাকা ; অনেকটা অভিমান সমস্ত নিঃশ্বাস ! তবু তুমি থাকতে প্রিয়ংবদা কেন হাওয়া নির্জন ?
এই তো সে-ই কবিতা থেকে উদাস হেঁটে আসা দ্বিতীয় জগত ; স্বপ্ন থেকে নীরবতার ক্ষমাহীন অসহীষ্ণু সময় ,— এভাবেই ছুঁই দেহভর্তি তোর তপস্যায় প্রিয়ংবদা !
কিছু কিছু মিথ্যা ভীষণ ছান্দিক ; তবু কেন এই ধুলো রাস্তায় নানাবিধ সর্তগুলো পোডায় আমাকে ,—– এভাবেই চাঁদ ওঠে বেমালুম পাতাপতঙ্গেরা ঘুনিয়ে যেতে যেতে ! সে-ই লম্বা একটা ছায়া ; সেখানে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টির সুচারু বর্ষণ , এটাও তোমার অভিমানের কথা চিন্তা করে এনেছি কবিতায় প্রিয় নারী !
স্বাভাবিক এখান থেকে খোলা জানলার এপাড় – ওপাড় ; সেখানে তুমি এক গদ্যময় স্মৃতি , মনের ভিতর অন্য এক মনের অন্তর্গত কথা বলা বলি ; এটাও কিন্তু অবুঝ পাগলামি ! এটাও তোমার জন্য মনেতে অসুখ নিয়ে একলা যাপন !
সত্যি দয়াপ্রার্থীর রূপ নিয়ে অনেকটা নিচু গলায় কতবার বলেছি ; প্রিয়ংবদা তুমি আমার !
স্নান ঘরে আমি জ্যোৎস্নার মত নিঃসঙ্গ ; চোখের ভেতর নানা কারণের দুঃস্বপ্ন আঁছড়ে পড়ে , তবু মধ্যরাতে বারান্দায় একলা এসে দাঁড়াই ব-হু ক্ষণ !
আমার কোনভাবে নিষ্কৃতি নেই ; তবুও উচ্চারণ করি সহজ নির্লজ্জে ,— আমি একমাত্রই তোমায় ভা-লো-বা- সি !
এই সময় পোড়ায় এভাবেই ; চোখের সমস্ত অশ্রুপাত ভিজিয়েছে কথাহীন পথ , তবু এই পথে এধার ওধারের ধাক্কা লাগে ! ভীষণ উষ্ণতায় বিছানায় এভাবে একা একা নির্ঘুমে রাত কাটে ,—– ওদিকের আকাশটায় এভাবেই জ্বলে ওঠে জ্যোৎস্নালোকের অন্য এক নক্ষত্র ; সেও আমারই মত প্রেমহীন !
শেষ একবার প্রতিদিনের অস্থিরতা জমে জমে বুকের মধ্যে জ্বলে শ্মশান ! ব্যক্তিগত মৃত্যু নিয়ে প্রতিদিন এভাবেই অনেকটা বেলা করে ঘুম ছেড়ে উঠে দাঁড়াই ; একমাত্র ভালোবাসার কাছে !
স্বভাবতই কবিতার প্রতিটা স্তবক ; অন্য এক অন্ধকারে নির্বাসন নিয়েছে ,—– সেখানে একক নীরবতায় প্রাচীন ক্যালেন্ডার খুলে দেখি ; তোমার সাথে কবে কোথায় দেখা হয়েছে , সেই স্মৃতিছবি !
সততই এভাবে ফিরিয়ে দিয়েছি প্রতিজন্মের মৃত্যু ; চেনা সময় , চেনা পথ , চেনা ফুলের গন্ধ , সব স-ব-ই ভাসিয়েছি চোখের জলে ! অথচ প্রিয়ংবদা এই বুকের একেবারে গভীরে তোমার তুমিকে সরিয়ে দিতে সাহস হয়নি ; যদি কোন দিন ফিরে এসে বল , কই কবি তোমার বুকের মধ্যে আমি কোথায় ??
________________________________________
মেঘ পালক ও বৃষ্টি ধ্বনি
_________________________________________
চোখ বিছিয়ে অন্তর্হিত ; হাত এগিয়ে যেইনা ধরতে যাব , স্বপ্ন যেন সাদা পৃষ্ঠায় এ’ভাবেই কুপোকাত্ ! তবুও যেন এই ঘুমন্তে শ্রবণ দেখা ; নেহাতি হাজার কথার বর্ণিত আঁকিবুকি ,—-
আকাশটা ঠিক আগের মতোই এক শারীরীক রঙ বদলে ঐতিহাসিক ! মনের ভেতর মন রাঙিয়ে আনন্দে ডুবু-ডুবু ,—-
আকাশটা সে-ই পদ্য পাড়ায় ইচ্ছে করেই বুক পেতেছে সোহাগ দিতে আমার কাছে ! ও-ই আকাশের সুদূর থেকে বৃষ্টি ঝরে একই ধারায় ; হঠাৎ যেন কি হচ্ছিল সেই ধ্বনিতে মন ডুবিয়ে এই আমিটার অতলান্তে !
মেঘ পালকে ভাসছি আমি ; অতীত এবং ভবিষ্যতে ! অন্য কোন ইচ্ছা গুলো ভরদুপুরে তোর এঁকেছে জ্যোৎস্না শরীর , এই জন্যেই ভেতরশুদ্ধ ঋণী রইলাম প্রিয়ংবদা ; সবটুকুই পাগল আবেগে !
কতবারযে তোকে পেয়েছি মেঘ সরিয়ে ; গভীর থেকে স্বভাবতই এভাবে ঠিক মন পুড়েছে ,—– অসুখটা যে পরমুখোপেক্ষী ; এটাওতো আগে বুঝিনি !
বৃষ্টি বৃষ্টি চোখ খানি তোর ; বেশি বললে বিশ্বব্যাপী ! ওই চোখেতে সারা বছরই আমার কাছে আষাঢ় – শ্রাবণ ,—- যদিও ঠিক এই সময়ে বাতাস হতে ইচ্ছা করে ; একমাত্র তোর জন্যে প্রিয়ংবদা !
এইতো আমার ভিতরশুদ্ধ তুই ছাড়া কেউ নেই ,—– আমার যত দোষগুলোকে আকাশ তারায় গুণন্তি করে মিলিয়ে নিলাম ; হেয়ালী নয় , সত্যি বলছি প্রিয়ংবদা ! এবার আমায় ক্ষমা করে দে ; তোর শরীরে ভাসার জন্য পুণ্যবান হতে দে !
গোটা রাতটা আমার মতোই অর্ধেক অবিশ্বস্ত ; তবু আমায় ক্ষমা করিশ ঘুম হারানো নির্ঘুমেতে এমনি ভাবে ,—– মেঘ যেন সেই তেপান্তরে উড়তে উড়তে অনেকটা দূ-র প্রেম প্রবাহে ; অস্পষ্ট কুমারী ! এই ঘরেরই এই বিছানায় অহরাত্রি তোরই স্মৃতি ; কি করে যে ভুলতে পরি প্রিয়ংবদা ? বন্ধ চোখের ভেতর থেকে ক্রমাগত একই ধ্বনি ; সঙ্গী কিম্বা সহপাঠী ,—-
যদিও আমার এই চিঠিতে আসা যাওয়ার চেনা পথটা বৃষ্টির শব্দে শব্দে কি ভাবে যে দুঃস্বপ্নের ভেতর মুছে গেল ! একমাত্র তুই সাক্ষী থাকলি ওরে পাগলী !!
________________________________________
স্মৃতিঘর ও পরিচিত উপহাস
________________________________________
যদি ওভাবে উচ্চারণ হত অফুরান স্বপ্নগুলো ; তাহলে আর একবার মৃত্যু নিয়ে ঘুমিয়ে পরবো এই ঘরে , এই বিছানায় !
মহাবনস্পতি থেকে শূন্যের অদূরের আকাশ ; এধারে – ওধারে মাখামাখি নীলের বৃষ্টি ….. ভেতরে নিরাময় স্তব ; চোখের পিঞ্জরে নির্জন নিঃশব্দ কথা , আরও কত প্রাঞ্চল অসুখ ; এ আমারই !
নতুন কেনা চশমায় চোখ বাসা বাঁধে ; হাওয়ায় বাতাসে ভাসে এ বাড়ির প্রতিটা স্তবক ৷ চার ধারের চোখগুলো ছায়া ছায়া ভাসমান ; অদ্ভুত হেঁয়ালী নিয়ে নির্বাক এভাবেই স্বপ্নে ঘুরে গেছে ব-হু বার ,—- অথচ প্রত্যন্ত অস্থিরতায় কেউ যেন শরীরের সমস্ত নগ্নতা আদিখ্যেতায় দেখাতে চেয়েছে এই আমিটাকে ! এই বাড়ি , ঘর – দোর , চেনা সিঁড়ির প্রতিটা অবয়ব কবে থেকে অন্য এক সময় থেকে নির্বাসন নিয়েছে ! অথচ এখন …..
সেই দেরাজে লুকিয়ে রাখা মৃত প্রজাপতির ডানা ; সেটাও মনকে পোড়ায় !
এই গভীরের অসুখ স্মৃতিভিক্ষা করে সময়ের কাছে কতবার , কতভাবে ,—- তবু যতবার আমার শরীর ছেড়ে চলে যাওয়া ; আজীবনের কবিতাদের ফেলে , সেগুলো এখন বাহিরের দরজায় দাঁড়িয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছে !
কাউকে এভাবে মন খুলে ডাকিনি এভাবে ; সেই আকাশ পাড়ের চাঁদ , সেও বৃষ্টির ভেতর আমার ডাক শুনতে পায়নি একবারও !
স্নানঘরের ভেতর বারোমাসের স্বপ্নদোষ ; তারাও মধ্যরাতের দুঃস্বপ্নে এসে আমি কেমন আছি খোঁজ নিয়ে গেছে !
কাল সারারাত এই মেঘ-বৃষ্টির ভেতর ঘরের জানলা খোলাই ছিল !
মনের মধ্যে দিয়ে কত রাতের নির্ঘুম যাপন ; সেও পাখির বাসার মত নীরবতায় একাকার ,—— সবটাই এই স্মৃতিঘরে একাই জীবন পেতে বসে আছে !
কেউ একজন মৃত্যুর পরেও নিমন্ত্রণ পাঠিয়েছে আমাকে ; উষ্ণ আলতো উচ্চারণে ,—– ভেতরের যাবতীয় প্রাপ্য দুঃখ ; তারাও আমার পায়ের নীচের রাস্তায় নির্দ্বিধায় অশ্রু ঝরিয়েছে !
এই রাস্তায় আমার নাম ধরে কবেকার আধপোড়া স্মৃতি ডেকেছে ; সেটাও নির্ঘুম ঘুমন্তে শুনতে পেয়েছি ,—– এই অন্তহীন সময় শ্মশান থেকে আমিও অশরর বৃষ্টি ভিজে ফিরে আসা ;
অন্য কোন জন্মঘরে ! মৃত্যুর অনেক পরে …..
___________________________________________
দর্পণে পিপরীত মেরুকরণ
____________________________________________
অন্য দরজায় শয়তান এসে দাঁড়ালে অনুমানের ফর্দ ঝাপসা হয়ে যায় ! এটাও আমাদের অস্তিত্বের সংকট ; তা না হলে বিভিষণপ্রথম দল পালটানোর সাহস পায় !
মাঝেমধ্যে মোমবাতির নিচে অন্ধকার স্পষ্ট হয়ে ওঠে , তাই জ্যোৎস্না পেতে দিয়েছি প্রাচীন বৃক্ষের নিচে ,—– কেউ একজন মনস্তত্ত্ব নিয়ে সাধারণ মানুষগুলোকে ঠকাচ্ছে সমষ্টির সমর্থন চরিতার্থ করার জন্য !
এভাবেই চলছে দুনিয়া ; যা কিছু পালটেছে সবটাই নড়বড়ে ঘড়ির কাঁটা ! এটাই নাকি ঐতিহাসিক বিপ্লব !! বাকিটা ঈশ্বর চিহ্ন দিয়ে আঁকা …….
________________________________________
পোশাক ছেড়েছি নগ্ন হইনি
________________________________________
আস্তিন থেকে মুখ বারিয়ে দিল ছবির শহর ; স্বীকার্য মধ্যভাগে প্রাণ সামলে স্বাগত শব্দ কিছু ঝাপসা খোলা বেমালুম সরস্বত ! অতিরিক্ত ঝিম মেরে কৈশোর এভাবেই বিলাসি পদ্যের ভেতর অবিচল শূন্যতা আঁকে ,—- তবুও পাংশুটে এক রাস্তায় মধ্যরাতে একা একা বৃষ্টিতে ভিজতে – ভিজতে একটা লোম ওঠা কুকুর পদবিহীন সারমেত্ত নাবালীকার যোনীর জায়গা জিভ দিয়ে চাটে !
আলো গুলো জ্বলছে সারারাতের বৃষ্টির ভেতর ,—- স্বজনহীন কালো রাত বৃষ্টি নিয়েই নির্ঘুম একক এভাবেই ! কোথাকার মন থেকে রাতবেস্যারা কটুবাক্যে নিজেরাই পর্দা সরিয়ে দিয়ে অচেনা দরজা খুলে দেয় অলৌকিক রাতসঙ্গীর কাছে ,— আত্মগর্বে বুদ্ধিজীবী পোকা-মাকোড়েরা এই রাস্তাতে দিন হলে মিছিল করে ; তবু অন্য প্রশ্ন আঁকে বেহায়া প্রজাপতির দল !
সর্দার পাড়ার কিছু মেয়ামানুষ রাতের শহরকে দেখায় পেটের মধ্যে থাকা অদেখা ভুবন !
এভাবে প্রায় দিনই এই রাস্তায় আমি চলি অনেক অসুখ বুকে নিয়ে ; তবু হাইওয়ের মাঝ বরাবর দিয়ে কোনো এক অচেনা মদ্যপ ঈশ্বর অসাবধানে হেটে হেটে রাস্তা পাড় করে !
এই কটা দিন দেওয়ালের রাজনৈতিক স্লোগান গুলো বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে বর্ণমালা হরায় !
যদিও এই সর্বনাশ ঘুরে ফিরে নিরবে নিভৃতে কাঁদে বিবেক পাড়ায় ,—– শয়তান শৃঙ্খলে বাঁধা শহরের আইন ; প্রতিরাতে এই বৃষ্টির ভেতর স্বপ্নে স্বপ্নে ঘুম বিক্রি করে অন্যমনা চাঁদ ! কথা হারিয়ে ওই লোকটা স্মৃতির ভেতর মনে মনে সোহাগচিহ্ন মুছে দেয় দর্পণে সূর্যদয় হলে ,—- স্বভবতই এমনই বিরামহীন ছায়াচিত্র ; ওধারের শূন্যতাকে চ্যালেঞ্জ ঠুকে নিদারুণ ধারাভাস্যে বলে , পোশাক ছেড়েছি কিন্তু নগ্ন হইনি !!
_________________________________________
ধ্রুপদী কখন
_________________________________________
এখান এখানে কিছু পৃষ্ঠার আদর-কদর “— এ সুধাস্বর আলোকিত *** চাঁদ ওঠা নিচু ডোবার মধ্যে সাঁকো ভাঙার গদ্য প্রহর
সেখানে চোখ বন্ধ নীরব সত্যরা কাল থেকে মহাভয়-শঙ্কায়
স্তম্ভিত রাত্রি যাপন করতে করতে দ্বিমুখী দৃষ্টির প্রত্যন্ত কথা পাত
করে !
এই উষালোক জুড়ে একরোখা নষ্ট মেঘ চলেছিল নির্বাসন নিতে,
উপোস ভেঙে উঠে আসা কিছু কালের আধপচা কঙ্কাল কবিতার
সহজ ব্যাখ্যা চেয়ে ছিল নির্লিপ্ত সিগারেটের কাছে ;
তারপর থেকে বাতাস কথোপকথনে হিজিবিজি দেহজ স্বপ্ন ডেকে
নেয় অন্য কোন নির্জনতা !!
________________________________________
প্রেম থেকে ঘুরে আসার পর
_________________________________________
প্রায়ই আমাদের কথাগুলো নষ্ট হচ্ছে
সেই কারণেই
কতোবার ওষ্ঠ সখ্যতায় বলি ভা-লো-বা-সি ;
ঢাক ~ ঢোল পিটিয়ে নির্দিষ্ট রাস্তার পেছনে এলে, কবিতাটা হঠাৎ
ভিরের ভেতর থেকে বলে ওঠে সম্বল হারানোর গল্প !
কোথাকার পাপ পুণ্যের বালাই নিয়ে নেচে নেচে গেয়ে ওঠে
অন্ধকার রাতের ঠুনকো ঝি-ঝি, —
কবিদের পাশাপাশি তিনিও নিয়মিত চলেন মধ্যপ্রাচ্যের ভেতর
এরপর পুরোনো চিঠিতে চুম্বন চুম্বন গন্ধ স্পষ্ট দেখা দেয় —
মলাট গর্ভে কথা হেঁটে চলে কতশত হাজার বছর !
শেষ পর্যন্ত পদ্মপাতায় শামুক হয়ে ঢেকে নেয় একখণ্ড স্বপ্ন !
_________________________________________
কবিতা না হয়ে ওঠার কথা
__________________________________________
নেপথ্যে আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ জ্বালা
প্রাচীন দহনে তিড়তিড় কাঁপে সমর্পণ করা সমস্ত কিছু, —
উল্টো বাতাসে কবিতার তেষ্টা নিয়ে রাত পার করে নরকের কীট
কেউ কেউ আবার বুকের মধ্যে রুইয়ে দেয় এক মুঠো অভিশাপ !
কিছু কিছু ক্ষেত্রে অলৌকিক কিছু তারা ফোটে
মন খারাপের দিন দহনলোভা দোলনায় দুলে ওঠে স্মৃতিভ্রষ্ট চাঁদ
কী জানি কী ভাবে ব্যাথার মধ্যে ডুবে যায় জননীর হৃদয়স্পন্দন
আজ অতলান্তে চুপ করে বসে থাকার অভ্যাস করছি, —
তবুও অন্যের সাথে পথ চলে গেছে একশোটা সিঁড়ি টোপকে
অদূরে দলছুট চেহারা নিয়ে সুবর্ণরেখার পাশে স্তব্ধ অনিয়ম !
________________________________________
প্রতিবিম্ব দেখি, অথচ শরীর দেখিনা
_________________________________________
সমতল ভূমি গুহাচিত্রে অপরিণত কান্নার ছাপ
কতবার এই চোখে ছুঁয়েছি শরীর, — জ্বরের গরল জ্বলে নীল সাদা
ঘুমন্ত – ঘুমের ঘোরে অপার্থিব গুজবের ক্যানভাসে !
সব লেখাই যে খ্যাতিহীন অন্য দিকে চলে গেছে ;
শেষ বৃষ্টিতে উপচিয়ে পড়ে নাবালক মনন, — কবেকার ভালোবাসা ঈশ্বর স্বপ্নে বিভোর, অথচ প্রণয় জ্বালায় পুড়ে ছাই হয়ে গেছে
রাস্তার সমস্ত আঁকাবাঁকা নিয়ম ~ অনিয়ম !
গুপ্ত পদার্থ ঢেলে শতদল হেসে বলে চিহ্নিত করা সহবাস কথা
পাশাপাশি তিনিও ছিলেন ভাঙা-গড়া সর্বনাশ নিয়ে, — এইসব কথায় কাছাকাছি আসে আদ্যিকালের আদিখ্যেতা ;
তবুও তো বৃষ্টির মধ্যে ভেজে প্রাচীন কান্নার চোখ !!
________________________________________
অস্বীকার তো করিনি তোকে
________________________________________
একটা ছায়ার উপর দাঁড়িয়ে মনে হল যেন আমিও কৃয়াপদহীন ; অশরীরী ! কবেকার মনটুকু জটিল সময়ের ভেতর দিয়ে থেকে থেকে ভুলে গেছে নিজেকে নিজেই ,—– এই মন দেহশূন্য নামগোত্রহীন অপ্রমেয় বিদেহী !
তুই অস্বীকার করলেও , না করলেও আমি প্রাচীন ভাষ্কর্যের মত এভাবেই একা ও একক রোদ বৃষ্টিতে নিঃসঙ্গ ! মন খারাপের গন্ধে নির্ঘুমে একাই থেকেছি স্মৃতিবাস সম্মেলিত ; এই নৈমিত্তিক কারণে তোকে ছুঁয়ে দেখার সামর্থ্য হয় নি একবারও ….. তবুও এই প্রেমগুলোতে তুই-ই যেন কুয়াশা মেখে অস্পষ্ট ভাসমান এখন !
কবিতার পাতায় পাতায় বুদ্ধিদীপ্তা সুন্দরি তুই , এটা যেন আমার নিঃশব্দে বলে ফেলা কাঙালপনা ; তাই না রে ?
সেবার হঠাৎ বৃষ্টিতে বুকে জ্বলছিল অহংকার ; অন্য এক স্বপ্নের কাছে তুই ও পলাশ রঙা হাসি ছড়িয়ে বিক্রি করছিলি তোর আনন্দ – সুখ ; আরও কত কি ! আমি তখন কতকালের শ্মশানে একা এভাবেই পুড়ছিলাম ; সেই দেখে দেখে !
এই একটাই দেওয়ালহীন ঘর ; আশ্চর্য রকম বৈরাগ্যে অনেকটাই রূপকথার মত ! এখানে এই ঘরে তোর শ্বাস – প্রশ্বাস একদিন ছিল ভীষণ অলিখিত সর্তহীন ….. অথচ এখন এই ঘরটা নেটওয়ার্ক ছাড়া বেমালুম নিরবতায় আহত বিষাদাকীর্ণ তুইহীন নিঃশব্দ ; নির্জন !
কিছু কিছু নির্জনতা নির্ধারিত স্তব্ধ ; একেবাকেই কথাহীন ৷ নতুবা প্রেমের কাছে অনেকটাই অহর্নিশ কৃতদাশ ! অন্তর্দহনে দগ্ধে দগ্ধে না মরেও মৃত চিরকাল ,—- যদিও কবিতার কাছে কতবার তোর জন্যে ক্ষমাও চেয়েছি হৃদয় শূন্য করে ; কতবার এই ঘরের বিছানা চাদর পুড়েছে অমনষ্কে সিগারেটের আগুনে , একমাত্র তোকে মনে করে ! স্নায়ুতে মায়াবন্ধনী তুই ; এই অবধারিত মন কষ্ট এক মূহুর্ত বিশ্রাম দেয়নি আমাকে ….. অথচ বহু দূর থেকে একই পথ ধরে চলতে চলতে গাছবৃষ্টি চোখের পাতা ভিজিয়ে ছিল ; সেটা একমাত্র তোরই জন্য হে প্রেম !
মৃত্যু মৃত্যু স্বপ্নগুলো জীবন্ত ফসিল ; এই প্রবাহমান সৃজন কষ্ট গুলো ইচ্ছানুযায়ী মরে ও বাঁচে এটা একমাত্র তোরই জন্য হে প্রেম , প্রিয় নারী ! অশরীর ভালোবাসা !!
_______________________________________